আজ মঙ্গলবার ২২শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পরিকল্পিত যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনার পেছনে কি আমেরিকান অস্ত্রবাজারের লোভ?

পরিকল্পিত যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনার পেছনে কি আমেরিকান অস্ত্রবাজারের লোভ?

চীনা প্রযুক্তিকে বিতাড়নের মাধ্যমে বন্ধুত্বে ছুরি?**

বাংলাদেশ একটি কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানে অবস্থিত দেশ—দক্ষিণ এশিয়ার মাঝখানে, বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষে, চীন ও ভারতের মাঝামাঝি, আর দক্ষিণে সমুদ্রপথে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও নৌ-সামরিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু। এই অবস্থানকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ বহুদিন ধরেই আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর ‘সফট টার্গেট’।

বিশেষ করে, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক গত এক দশকে অভূতপূর্ব উচ্চতায় পৌঁছেছে—অর্থনীতি, অবকাঠামো, প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি—প্রায় প্রতিটি খাতে।
বাংলাদেশে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, ঢাকা-ভোলা ব্রিজ, গভীর সমুদ্র বন্দর—এসবের পেছনে চীনের সহায়তা অস্বীকার করার উপায় নেই।

তবে ঠিক এই মুহূর্তে, বাংলাদেশের সামরিক খাতে চীন নির্মিত যুদ্ধবিমানগুলোর হঠাৎ হঠাৎ রহস্যজনক দুর্ঘটনা, প্রশ্ন তুলেছে—
এই দুর্ঘটনা কি শুধুই প্রযুক্তিগত, নাকি এগুলোর পেছনে লুকিয়ে আছে আন্তর্জাতিক অস্ত্রবাজারের ষড়যন্ত্র?

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে চীনা যুদ্ধবিমানের অপ্রতিরোধ্য শক্তি, অথচ বাংলাদেশে বিপর্যয় কেন?

সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত সংঘর্ষে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত চীনা যুদ্ধবিমানগুলো (বিশেষ করে JF-17 ও Chengdu J-10C) ইউরোপীয় প্রযুক্তির আধুনিক যুদ্ধবিমানকেও কার্যত “মুড়ির টিন”-এর মতো উড়িয়ে দিয়েছে।
যেখানে আন্তর্জাতিকভাবে পরীক্ষিত ও সফল এই প্রযুক্তি পাকিস্তানের আকাশ রক্ষা করছে, সেখানে ঠিক একই উৎসের যুদ্ধবিমান বাংলাদেশে প্রশিক্ষণের সময় বারবার বিধ্বস্ত হচ্ছে—এটাই কি নিছক কাকতালীয়?

বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধে পরীক্ষিত চীনা প্রযুক্তিকে হেয় দেখিয়ে তাকে অবিশ্বস্ত বানানোই হচ্ছে উদ্দেশ্য, যাতে করে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী বাধ্য হয় চীনকে বাদ দিয়ে আমেরিকান বা ইউরোপীয় প্রযুক্তি আমদানিতে উৎসাহিত হয়।

চীন—বন্ধু, নাকি প্রতিদ্বন্দ্বী?

চীন কখনও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রকাশ্য হস্তক্ষেপ করেনি। বরং তাদের সহায়তা এসেছে নিঃশর্ত, রাজনৈতিক দাবিদাওয়া ছাড়া।
অন্যদিকে, আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্ব প্রায়শই গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নির্বাচন ইত্যাদি ইস্যুকে পুঁজি করে চাপ প্রয়োগ করে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা যেভাবে বেড়েছে, তা আন্তর্জাতিক অস্ত্র লবিগুলোর জন্য ‘চোখের কাঁটা’ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য অনেক কূটনীতিকের।

**সুতরাং প্রশ্ন উঠছেই—চীনা যুদ্ধবিমানের প্রতি বাংলাদেশের আস্থা নষ্ট করতে এটা কি পরিকল্পিত দূর্ঘটনা?

আন্তর্জাতিক রাজনীতির পেছনে কি লুকিয়ে আছে বাণিজ্যিক স্বার্থ?**

এই প্রশ্ন আজ শুধু সামরিক বা কূটনৈতিক নয়—এটি জাতির অস্তিত্ব, নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন।
এখন সময় এসেছে, সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলের পক্ষ থেকে খোলামেলা জবাব ও স্বচ্ছ তদন্ত প্রকাশের।
জনগণ জানতে চায়—দোষীদের শাস্তি হবে কিনা, এবং এই ষড়যন্ত্রের জাল ভেদ করে দেশের প্রকৃত মিত্রকে পাশে রাখা যাবে কিনা।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *