
Channel IR ডেস্ক রিপোর্ট
থামছে না ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা, কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলি
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর নতুন করে চরম উত্তেজনায় ঠেকেছে ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক। হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর থেকেই দু’দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, হুমকি-ধামকি এবং সামরিক তৎপরতা বেড়েই চলেছে।
সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যেই গত রোববার (২৭ এপ্রিল) রাতেও কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর দু’দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। টানা চার রাত ধরে চলছে এ সংঘর্ষ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, কুপওয়ারা ও পুঞ্চ জেলার বিপরীতে পাকিস্তানের সেনারা বিনা উসকানিতে ছোট অস্ত্র দিয়ে গুলি চালায়। তবে ভারতীয় সেনারা ‘কার্যকর জবাব’ দিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই প্রথমবারের মতো পুঞ্চ সেক্টরেও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনলো ভারত।
এদিকে পাকিস্তানি পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। পাকিস্তানের গণমাধ্যমও এ নিয়ে নীরব।
প্রসঙ্গত, পেহেলগাম হামলার পর থেকেই উত্তেজনা দ্রুত বাড়ছে। হামলার জন্য পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিত করে এবং ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি, ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্কও স্থগিত করেছে ইসলামাবাদ।
পানি ইস্যুতেও অবস্থান কঠোর করেছে পাকিস্তান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ সাফ জানিয়েছেন, যেকোনো মূল্যে সিন্ধুর পানি রক্ষা করা হবে। এ নিয়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে হুমকি দিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো। তার ভাষায়, “সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত।”
অন্যদিকে, পেহেলগাম হামলার জবাবে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার হুঁশিয়ারি, “সন্ত্রাসের আশ্রয়দাতাদের আমরা খুঁজে বের করব এবং এমন শাস্তি দেব, যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না।” ১৪০ কোটি ভারতীয়ের দৃঢ় সংকল্পের কথা উল্লেখ করে মোদি জানান, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে, তবে আপাতত শান্তির কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না।