Channel IR। ডেক্স রিপোর্ট
মুহাম্মাদ এমাদুল ইসলাম
১৭/জুন/২০২৫
স্ত্রীর মুখেই স্বামীর মৃত্যুর ঠিকানা: ইরানে মোসাদের নিখুঁত চক্রান্ত।
ইরানের হৃদয়ে পৌঁছে যাওয়া নারী গুপ্তচরস্ত্রীদের জিভে স্বামীদের মৃত্যুর ফাঁদ! ক্যাথরিন পেরেজ শকদাম—একজন ফরাসি তরুণী। তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং নিজেকে শিয়াপন্থী বলে ঘোষণা করেন।
ইরানি বিপ্লবের প্রশংসা করেন এবং “বিলায়তে ফকিহ”–এর সমর্থনে লেখালেখি করতে থাকেন। তাঁর একটি প্রবন্ধ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হয়।কিন্তু এই মুখোশের আড়ালে ছিল মোসাদের কড়া নজরদারি।ক্যাথরিন ছিলেন না কোনো সাধারণ গুপ্তচর।
তিনি ইরানে প্রবেশ করেছিলেন লেখিকা, সাংবাদিক ও চিন্তাবিদ হিসেবে। রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলেন, রেভল্যুশনারি গার্ডের সদস্যদের সঙ্গে বসেন, এমনকি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। “গবেষণা”র অজুহাতে তিনি সংবেদনশীল অনেক এলাকাও ঘুরে দেখেন।তবে সবচেয়ে বিপজ্জনক ছিল—নারীমহলে তাঁর প্রবেশ।তিনি উচ্চপদস্থ সামরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করেন, যেন তিনিও তাঁদেরই একজন।
আর তারাই খোলামেলা বলতেন—স্বামীদের কাজ, অবস্থান, ভ্রমণের সময়সূচি ও দৈনন্দিন জীবনযাপন সম্পর্কে। প্রতিটি কথা রেকর্ড করা হতো, আর প্রতিটি তথ্য পৌঁছে যেত দেশের বাইরে।এই তথ্যের ভিত্তিতেই নির্ধারণ করা হতো লক্ষ্যবস্তু।তারপর একে একে সংঘটিত হতো হত্যাকাণ্ড।নারীদের মুখে বলা নিষ্পাপ কথাগুলোই হয়ে উঠত তাঁদের স্বামীদের মৃত্যুর কারণ।যখন তাঁর প্রতি সন্দেহ দানা বাঁধে, তিনি ঠিক সময়মতো ইরান ত্যাগ করেন—দরজা বন্ধ হওয়ার আগেই। তবে ততক্ষণে তিনি তাঁর কাজ সম্পন্ন করেছেন। ইরানের ওপর এক ভয়ানক আঘাত হেনেছেন, যার রেশ এখনো রয়ে গেছে।এই সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতেই ইসরায়েল এখনো পরিচালনা করছে একের পর এক নিখুঁত অভিযান।যার মূল উৎস—ক্যাথরিনের মাধ্যমে ঘর থেকেই পাওয়া গোপন তথ্য।এটা কেবল একটি গুপ্তচর কাহিনি নয়—এটা একটি রাষ্ট্র-স্তরের নিরাপত্তা বিপর্যয়।
আজকের এই ছায়াযুদ্ধে গুলির আওয়াজ শোনা যায় না। বরং হত্যা ঘটে—নারীমহলের শান্ত আলাপচারিতায়।ইরান এই ঘটনার অভিঘাত কাটিয়ে উঠুক। মুসলিম রাষ্ট্রগুলো লুকিয়ে থাকা ‘ক্যাথরিন’দের হাত থেকে নিরাপদ থাকুক।