আজ বৃহস্পতিবার ৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সোমালিয়ায় আশ-শাবাবের কৌশলগত অগ্রগতি ও মোগাদিশুর অবরোধ

Channel IR | ডেস্ক রিপোর্ট

সোমালিয়ায় আশ-শাবাবের কৌশলগত অগ্রগতি ও মোগাদিশুর অবরোধ
প্রকাশকাল: জুন ২০২৫

রিপোর্টের সারসংক্ষেপ:
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিন (আশ-শাবাব) সোমালিয়ার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে উল্লেখযোগ্য সামরিক অগ্রগতি অর্জন করেছে। ফিল্ড পর্যবেক্ষণ ও স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, সংগঠনটি বর্তমানে রাজধানী মোগাদিশুকে ঘিরে একটি কার্যকর অবরোধ কৌশল বাস্তবায়ন করছে, যা দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের সামরিক ও লজিস্টিক সক্ষমতার ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করেছে।

মূল প্রতিবেদন:
আশ-শাবাব সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক বৃহৎ আকারের সমন্বিত সামরিক অভিযানের মাধ্যমে পশ্চিমা সমর্থিত মোগাদিশু সরকারের অবস্থান দুর্বল করে তুলেছে। সংগঠনটি বর্তমানে মোগাদিশুর উত্তর ও পশ্চিম দিকে প্রধান শহরসমূহ দখলের মাধ্যমে রাজধানীটির চারপাশে একটি কৌশলগত বলয় গড়ে তুলেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে সরকার-সমর্থিত বাহিনীর বিরুদ্ধে আশ-শাবাবের ব্যাপক সামরিক আক্রমণ শুরু হয়, যার অংশ হিসেবে এপ্রিল মাসে আদান-ইয়াবাল শহরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করা হয়। এই অভিযানে মোগাদিশু সরকারের প্রায় ৪৫০ এরও বেশি সেনা নিহত হন এবং শতাধিক সেনা আহত ও বন্দী হন। আদান-ইয়াবালের পতনের মাধ্যমে সংগঠনটি শাবেলি ও হিরান রাজ্যের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।

বর্তমানে মোগাদিশুর সাথে সংযোগকারী ৫টি মূল সড়কের মধ্যে ৪টি আশ-শাবাবের নিয়ন্ত্রণাধীন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে সরকার বাহিনীকে বনাঞ্চলঘেরা সংকীর্ণ এবং অরক্ষিত বিকল্প রুট ব্যবহার করতে হচ্ছে, যেখানে তারা প্রায়শই আক্রমণের শিকার হচ্ছে। ফিল্ড রিপোর্ট অনুযায়ী, এই অঞ্চলে আইইডি বিস্ফোরণ ও অতর্কিত হামলার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

মোগাদিশুর অভ্যন্তরে পরিস্থিতি দিন দিন সংকটময় হয়ে উঠছে। মিসাইল হামলা এবং আত্মঘাতী বিস্ফোরণের হার বেড়েছে। শহরটি কার্যত অবরুদ্ধ এবং রাজধানীর বাইরে থেকে সামরিক ও মানবিক সহায়তা পৌঁছানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।

পটভূমি:
২০২২ সালে সোমালিয়া সরকার আফ্রিকান ইউনিয়ন, তুরস্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় আশ-শাবাবের বিরুদ্ধে সমন্বিত সামরিক অভিযানে নামে। প্রাথমিক সাফল্য অর্জন করলেও, দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত সমর্থনের অভাবে সরকারের অগ্রগতি স্থবির হয়ে পড়ে। অন্যদিকে, আশ-শাবাব গত দুই বছরে তাদের হারানো ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করে এবং একটি সুসংগঠিত কৌশলের আওতায় রাজধানীর দিকেই অগ্রসর হতে থাকে।

উপসংহার:
আশ-শাবাবের সামরিক অগ্রগতি ও কৌশলগত অবস্থান স্পষ্টতই সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশুর জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ হুমকি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা যায়, যদি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সহায়তা আরও দৃঢ়ভাবে সংগঠিত না হয়, তবে দেশের কেন্দ্রীয় প্রশাসন গভীর সংকটে পড়তে পারে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *