
লোহিত সাগরে হুথির প্রতিরোধ: আমেরিকার বিপর্যয়!
Channel IR ডেস্ক রিপোর্ট
লোহিত সাগর বর্তমানে এক সংঘাতময় যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। একের পর এক বিস্ফোরণ, ড্রোন হামলা ও যুদ্ধজাহাজের মহড়া পরিস্থিতিকে ক্রমশ উত্তপ্ত করে তুলছে। ইয়েমেনের হুথি বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান সংঘাত এখন বিশ্ব রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
সাম্প্রতিক হামলায় হুথি বাহিনী মার্কিন বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস হ্যারি এস. ট্রুম্যান লক্ষ্য করে ক্রুজ মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে এটি ছিল তাদের তৃতীয় হামলা। হুথিদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ অভিযান যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব এবং গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অংশ।
অন্যদিকে, হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের সানা, সাদা ও হুদায়দায় একের পর এক বিমান হামলা চালায়, যেখানে অন্তত তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে ইয়েমেনি গণমাধ্যম জানিয়েছে। পাল্টা জবাবে, হুথিরা একটি মার্কিন এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যা প্রায় ৩৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা মূল্যের।
গাজা ইস্যুর কেন্দ্রবিন্দুতে হুথিরা
হুথিদের রাজনৈতিক শাখা আনসারুল্লাহ আন্দোলন স্পষ্ট করে জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ প্রত্যাহার ও হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি স্বার্থে হামলা অব্যাহত থাকবে। হুথিরা এটিকে শুধুই প্রতিরোধ নয়, বরং ন্যায্য যুদ্ধ হিসেবে দেখছে।
মধ্যপ্রাচ্যের কৌশলগত পরিবর্তন
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইয়েমেন এখন আর দুর্বল রাষ্ট্র নয়। হুথিরা এক সুসংগঠিত প্রতিরোধ বাহিনী গড়ে তুলেছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। তাদের কাছে উন্নত ড্রোন প্রযুক্তি, ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ মিসাইল, শক্তিশালী বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হুথিদের অস্ত্রভাণ্ডারে রয়েছে সামাদ সিরিজের ড্রোন, বদর ও কায়েম সিরিজের মিসাইল, আত্মঘাতী ড্রোন কৌশল—যা লোহিত সাগরকে এক শক্তিশালী প্রতিরোধ বলয়ে পরিণত করেছে।
পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ গতিপথ
লোহিত সাগরের সংঘাত এখন মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে। যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী পদক্ষেপ এবং হুথিদের প্রতিরোধের ফলে এই অঞ্চলে নতুন কৌশলগত সমীকরণ তৈরি হতে পারে, যা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।
Channel IR | আন্তর্জাতিক ডেস্ক