আজ বৃহস্পতিবার ১৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

“ভেতরে টয়লেট, বাইরে ইমরান —একটা ঘরে দুটো নরক ছিল।”

Channel IR। ডেক্স রিপোর্টার

মুহাম্মাদ এমাদুল ইসলাম

১৯/জুন/২০২৫

🟥 গুমের সেল থেকে—একজন ভুক্তভোগীর অভিজ্ঞতা

– তপু আহমেদ

আমাদের গুমের সেলগুলোর ভেতরেই টয়লেট ছিল। সেগুলো ছিল আধা দেয়াল ঘেরা—উপরে খোলা। ন্যূনতম গোপনীয়তাটুকুও ছিল না। টয়লেটের পানির অবস্থা ছিল ভয়াবহ। ট্যাপ খুললে কখনো কখনো কালচে, দুর্গন্ধযুক্ত পানি বের হতো—যা একেবারেই পানযোগ্য ছিল না।

নিয়ম ছিল, আমাদের জন্য ফিল্টার করা পানি এনে দেওয়ার। কিন্তু অধিকাংশ গার্ডই সেটা মানত না।

হাতে গোনা কয়েকজনই মাঝেমধ্যে আমাদের জন্য দুই লিটারের বোতলে পানি এনে দিত। সেই পানি কখনো দুই-তিন দিন ধরে খরচ করে টিকতে হতো। আমরা প্রহর গুণতাম—কবে সেই মানুষগুলোর ডিউটি পড়বে, যারা অন্তত ন্যূনতম মানবতা দেখাবে।সব গার্ডের মধ্যে সবচেয়ে বর্বর ছিল ইমরান নামের একজন। তার চেহারায় ছিল এক ধরনের নির্মমতা, আর শরীরটা ছিল যেন হাতির মতো—দেখলেই ভয় ধরত। সে ডিউটিতে এসেই প্রথমে সব লাইট জ্বালিয়ে দিত, যেন চোখ পোড়ে। পানি চাইলে গালি দিত—”টয়লেটের পানি খা!” বলেই অপমান করত। কেউ যদি বারবার পানি চাইত, তাকে অফিসে নিয়ে গিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করত।ছবিতে যাকে দেখা যাচ্ছে, সেই হচ্ছে ইমরান। জানি না, এই সন্ত্রাসীদের কখনো বিচার হয়েছে কিনা।

কোর্টে হাজিরার সময় এখনো দেখি—সিটিটিসির এই সব সদস্যরা বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। এখনো তারা হাসিমুখে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়। তাদের মুখে না আছে অনুশোচনা, না আছে লজ্জা।

আমরা যারা ভুক্তভোগী, তারা ভুলিনি। এই অন্যায়, এই বর্বরতা—একদিন ইতিহাস এর বিচার চাইবেই।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *