
ভারতের ওয়াকফ বিলের “প্রথম শহীদ” হরিয়ানার আকসা মসজিদ
ডেস্ক রিপোর্ট | Channel IR
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ফরিদাবাদে ঘটে গেছে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা—ভেঙে ফেলা হয়েছে প্রায় অর্ধশতাব্দী পুরোনো একটি মসজিদ। স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘আকসা মসজিদ’-টি ধ্বংস করা হয়েছে ১৫ এপ্রিল (মঙ্গলবার), যা ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য আরেকটি গভীর ক্ষতের স্মারক হয়ে রইল।
এই ঘটনাকে অনেকে ভারতের বিতর্কিত ওয়াকফ বিলের প্রেক্ষিতে “প্রথম শহীদ” বলেই আখ্যা দিয়েছেন। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের সময়-সময়ে মুসলিম ধর্মীয় স্থাপনা লক্ষ্য করে যেসব কর্মকাণ্ড চলছে, আকসা মসজিদের উচ্ছেদ তারই ধারাবাহিক অংশ।
মসজিদটি ফরিদাবাদের বড়খাল গ্রামে অবস্থিত ছিল এবং স্থানীয় মুসলিমরা দীর্ঘদিন ধরেই এখানে নামাজ আদায় করে আসছিলেন। তারা জানিয়েছেন, বিষয়টি এখনো সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন থাকা অবস্থাতেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে।
প্রশাসনের দাবি, মসজিদটি অবৈধ স্থাপনা হিসেবে চিহ্নিত ছিল এবং আদালতের নির্দেশনা মেনেই ভাঙা হয়েছে। ফরিদাবাদ পৌর কর্পোরেশন বলছে, এ উচ্ছেদ পূর্বনির্ধারিত ছিল।
তবে স্থানীয়দের মতে, এটি ছিল একপাক্ষিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ। গ্রামবাসী মুশতাক বলেন, “কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ করে প্রশাসন মসজিদ ভেঙে দেয়। এটি অত্যন্ত কষ্টদায়ক। মসজিদটি এক সময়ের গ্রাম প্রধানের দেওয়া জমিতে নির্মিত হয়েছিল।”
উচ্ছেদের সময় ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়, উপস্থিত ছিলেন তিনজন সহকারী পুলিশ কমিশনারও। আশপাশের দোকান সরিয়ে নিয়েই শুরু হয় মসজিদ ধ্বংসের কাজ—যা অনেকের মতে ছিল সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত।
ঘটনার পর এলাকায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকারকর্মীরা প্রশ্ন তুলেছেন, যখন দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন একটি ধর্মীয় স্থাপনা নিয়ে এমন ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা কতটা আইনি ও নৈতিক?
আকসা মসজিদ এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ নয়, বরং ভারতের মুসলিম ঐতিহ্য ও ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর আঘাতের এক জ্বলন্ত উদাহরণ। ওয়াকফ বিলের পরিপ্রেক্ষিতে এটিকে ‘প্রথম শহীদ’ হিসেবে অভিহিত করছেন বহু বিশ্লেষক।
Channel IR | রিপোর্টার: আরিফুল ইসলাম