
Channel IR ডেস্ক রিপোর্ট
বাংলাদেশ হয়ে সেভেন সিস্টার্সে যাওয়ার রেল প্রকল্প স্থগিত — কৌশলগত বার্তা দিল ভারতের দিল্লি
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ বাড়াতে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে নির্মাণাধীন রেল প্রকল্পগুলো হঠাৎ করেই স্থগিত ঘোষণা করেছে ভারত। প্রায় ৫,০০০ কোটি রুপির এই রেল প্রকল্পগুলোর মধ্যে আখাউড়া-আগরতলা, খুলনা-মোংলা ও ঢাকা-জয়দেবপুর রুটগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ভারত এই স্থগিতাদেশের পেছনে বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ভারতীয় শ্রমিকদের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কথা উল্লেখ করলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে দিল্লি একটি সুস্পষ্ট কূটনৈতিক বার্তা দিচ্ছে—যদি পারস্পরিক সম্পর্কে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও স্বচ্ছতা না থাকে, তাহলে যৌথ উন্নয়ন প্রকল্পগুলো থেমে যাবে।
প্রভাবিত প্রকল্পগুলো:
- আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ: ১২.২৪ কিমি দীর্ঘ এই রেলপথের ৬.৭৮ কিমি অংশ পড়ছে বাংলাদেশে।
- খুলনা-মোংলা রেলপথ: প্রায় ৩,৩০০ কোটি রুপির এই প্রকল্পের মাধ্যমে মোংলা বন্দরকে জাতীয় রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল।
- ঢাকা-টঙ্গী-জয়দেবপুর প্রকল্প: ভারতের এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে এই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন চলছিল, যার অগ্রগতি আশানুরূপ ছিল না।
দিল্লির বিকল্প পরিকল্পনা: ভারত এখন বিকল্প পথ হিসেবে ভুটান ও নেপাল হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে সংযোগ গড়ার নতুন রেলপথ পরিকল্পনায় মনোযোগ দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে বিহার ও উত্তর প্রদেশে রেলপথ সম্প্রসারণ, বিরাটনগর-নিউ মাল এবং গলগলিয়া-ভদ্রপুর-কাজলি বাজার রুটে সংযোগ প্রকল্প।
বাংলাদেশের জন্য বার্তা: এই স্থগিতাদেশ বাংলাদেশের জন্য শুধু উন্নয়নগত নয়, রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সংকেত। ভারতের সহায়তায় গড়ে ওঠা প্রকল্পগুলো যেমন কর্মসংস্থান, পণ্য পরিবহন ও বন্দরের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতো, ঠিক তেমনি এই স্থগিতাদেশ একটি কৌশলগত চাপও তৈরি করছে। এর মাধ্যমে ভারত বোঝাতে চাচ্ছে—স্থিতিশীল সম্পর্ক না থাকলে দিল্লির ‘এক দেশ, বহু বিকল্প’ নীতি কার্যকর হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শূন্যতা বাংলাদেশের জন্য চীনের অবকাঠামোগত প্রভাব বিস্তারের একটি নতুন সুযোগও তৈরি করতে পারে।
Channel IR ডেস্ক