
Channel IR | ডেস্ক রিপোর্ট
বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় খুলতে দেয়া হবেনা — হুঁশিয়ারি হেফাজত আমির বাবুনগরীর
তারিখ: ৫ জুলাই ২০২৫ | ঢাকা
বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর, শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী (দা.বা.)। তিনি সাফ জানিয়ে দেন—”বাংলাদেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় খুলতে দেয়া হবেনা।”
আজ ৫ জুলাই শনিবার, ঢাকার জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত “জুলাই গণঅভ্যুত্থান শহীদ স্মরণ, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায়” প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
ইসলামি মূল্যবোধের উপর হস্তক্ষেপের ষড়যন্ত্র
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, “বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র। আমাদের সমাজব্যবস্থা, পরিবারব্যবস্থা এবং সাংস্কৃতিক কাঠামো গঠিত হয়েছে ইসলামি মূল্যবোধের উপর। অথচ জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক কিছু সংস্থা মানবাধিকারের নামে এই দেশে ইসলামি শরিয়াহ, পারিবারিক আইন ও ধর্মীয় রীতিনীতিতে হস্তক্ষেপ করার অপচেষ্টা করছে। এসব পদক্ষেপ দেশের সার্বভৌমত্ব ও ধর্মীয় অনুভূতির ওপর হস্তক্ষেপ।”
তিনি আরও বলেন, “আল্লাহ তাআলা মানুষকে নারী ও পুরুষ—দুই ভিন্ন স্বভাব ও পরিচয়ে সৃষ্টি করেছেন। ইসলামে স্বীকৃত সম্পর্ক হলো বৈধ বিবাহ—নারী ও পুরুষের মধ্যে। সমকামিতা প্রকৃতির ও শরিয়তের পরিপন্থী। এই পশ্চিমা বিকৃত চিন্তা সমাজে নৈতিকতা ধ্বংস করে।”
কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
আলোচনাসভায় হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, “জাতিসংঘের কার্যালয় স্থাপনের নামে যারা দেশের স্বাধীনতা, ইসলামি মূল্যবোধ ও সামাজিক কাঠামোতে হস্তক্ষেপ করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে ঈমানদার জনতা কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। প্রয়োজনে রাজপথে নামবে।”
হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, “মানবাধিকার মানে প্রকৃতি ও ধর্ম অনুযায়ী মানুষের মর্যাদা রক্ষা করা। ইসলাম নারীকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে। কিন্তু বিদেশি সংস্কৃতি চাপিয়ে দিয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করলে তা কোনো ঈমানদার মেনে নেবে না।”
সরকারের প্রতি আহ্বান
বক্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান—জাতীয় স্বার্থ ও ধর্মীয় মূল্যবোধের স্বার্থে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা ও এ-সম্পর্কিত চুক্তি বাতিল করতে হবে।
শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা
৫ জুলাই ‘শাপলা ও চব্বিশের শহীদদের’ স্মরণে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে বক্তারা বলেন, “জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের উদ্দেশ্য ছিল ফ্যাসিবাদমুক্ত ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠন। আজ যারা ক্ষমতায় রয়েছেন, তাদের উচিত শহীদদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা, না হলে ইতিহাসের কাঠগড়ায় তাদের জবাবদিহি করতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, “দেশের ভিতরে-বাইরে ইসলাম ও স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যকে আরও শক্তিশালী করে দেশকে রক্ষা করতে হবে।”
উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন:
- নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল হামিদ (পীরসাহেব মধুপুর)
- মাওলানা মাহফুজুল হক
- মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী
- মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী
- মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী
- মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী
- মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী
- মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী
- মুফতি আজহারুল ইসলাম
- দফতর সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ
- এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বার্তাপ্রেরক:
মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী
যুগ্ম মহাসচিব, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ
📌 Channel IR
📍 সম্পাদনা: IR ডেস্ক
📅 প্রকাশকাল: ৫ জুলাই ২০২৫