
নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) কাছে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দিনগত রাতে টহলরত চারটি ভারতীয় রাফাল যুদ্ধবিমান শনাক্ত করে পাকিস্তান বিমান বাহিনী (পিএএফ)। পরে পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানের সমন্বিতভাবে প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করলে ভারতীয় রাফালগুলো পিছু হটতে বাধ্য হয়। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।
নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলো অবৈধভাবে অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের (আইআইওজেকে) আকাশসীমার মধ্যে টহল দিচ্ছিল, তখন পাকিস্তানের বিমানবাহিনী তাদের উপস্থিতি টের পায় এবং যুদ্ধবিমান নিয়ে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায়।

ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর দুই পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল সংঘটিত এ হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক ছিলেন। ২০০০ সালের পর থেকে এই অঞ্চলের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনাগুলোর মধ্যে এটি একটি।
এরপর ২৩ এপ্রিল ভারত একতরফাভাবে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় এ গুরুত্বপূর্ণ জলবণ্টন চুক্তিটি সাক্ষরিত হয়েছিল, যা দুই দেশের মধ্যে বহু সংঘাতের পরেও টিকে ছিল। পরের দিন পাকিস্তান ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি স্থগিত এবং ভারতীয় বিমানের জন্য তার আকাশসীমা বন্ধ করার হুমকি দিয়ে প্রতিশোধ নেয়।
ভারত দাবি করেছে, পেহেলগামের এই হামলায় আন্তঃসীমান্ত সম্পৃক্ততা থাকতে পারে, যদিও তারা কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সরবরাহ করেনি। বিপরীতে, পাকিস্তান দৃঢ়ভাবে তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ সত্য উদঘাটনের জন্য ঘটনার স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, দেশটির তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার গতকাল মঙ্গলবার রাতে সতর্ক করে বলেছেন, ইসলামাবাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে, ভারত সাম্প্রতিক পেহেলগাম হামলাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সামরিক হামলা চালাতে পারে।
এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ভারতের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে অভিযোগ করেন, তারা এই অঞ্চলে ‘বিচারক, জুরি ও জল্লাদের ভূমিকা’ গ্রহণ করছে, যাকে বেপরোয়া ও অস্থিতিশীলকারী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।
‘পাকিস্তান নিজেই সন্ত্রাসবাদের কারণে প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং এই ধরনের সহিংসতার যন্ত্রণা ও পরিণতি বোঝে’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে ইসলামাবাদের সংযম ও আঞ্চলিক শান্তির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।