আজ শনিবার ১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নবাবগঞ্জে মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ প্রভাবশালী যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে, থানায় অভিযোগ দায়ের, গ্রেফতারে গড়িমসি

Channel IR

মুহাম্মাদ এমাদুল ইসলাম। ১০/০৬/২০২৫

নবাবগঞ্জনবাবগঞ্জে মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ প্রভাবশালী যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে, থানায় অভিযোগ দায়ের, গ্রেফতারে গড়িমসিনবাবগঞ্জে মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ প্রভাবশালী যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে, থানায় অভিযোগ দায়ের, গ্রেফতারে গড়িমসি

প্রকাশিত: ১০ জুন ২০২৫ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন |ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় ১৪ বছর বয়সী এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, শারীরিক নির্যাতন এবং অশোভন আচরণের অভিযোগে এক প্রভাবশালী যুবকের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ব্যক্তি নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী যুবলীগের শিকারীপাড়া ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি এবং ভুয়া মাজার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ উঠেছে।‍ঘটনার বিবরণভুক্তভোগী খাদিজা আক্তার (১৪) নবাবগঞ্জ থানাধীন মনিকান্দা দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত মো. মাসুদ (৩৫), পিতা মো. শফি উদ্দিন, নুরপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং একই এলাকার প্রতিবেশী।অভিযুক্ত মাসুদগত ৬ জুন সকাল ১০টার দিকে, খাদিজা তার নিজ ঘরের শয়নকক্ষে একা অবস্থান করছিল।

এই সুযোগে মাসুদ ঘরে প্রবেশ করে এবং মুখ চেপে ধরে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। খাদিজার পোশাক খুলে ফেলার চেষ্টা, সেইসাথে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়া এবং জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

ভুক্তভোগী চিৎকার শুরু করলে অভিযুক্ত মাসুদ দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনার সময় খাদিজার বাবা-মা বাইরে বাজারে ছিলেন। পরে মেয়েটি তার নানী মমতাজ বেগমকে বিস্তারিত জানালে তিনি ও স্থানীয়রা ঘটনার সত্যতা পান এবং মমতাজ বেগম আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে পরামর্শ করে ৮ জুন নবাবগঞ্জ থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করেন।‍

থানা গড়িমসি ও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ শুরুতে গড়িমসি করে, মামলা নিতে অনীহা প্রকাশ করে। অভিযুক্ত মাসুদ রাজনৈতিক পরিচয়ের জোরে মামলা না নিতে চাপ দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ দায়েরের আগেই মাসুদের পক্ষ থেকে ভুক্তভোগী পরিবারের বাড়িতে গিয়ে হুমকি-ধামকি এবং গালাগাল করা হয়।

সেইসাথে অভিযোগ দায়েরের পর ভুক্তভোগী খাদিজা ও তার পরিবারের থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয় বলেও জানা গেছে।‍

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়াপ্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মাসুদ নিজেকে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ঘনিষ্ঠ পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছে। কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না।এক প্রতিবেশী বলেন:“শুরুতে সবাই চুপ ছিলাম।

কিন্তু যখন শুনলাম মামলা হচ্ছে, তখনই চারপাশ থেকে চাপ আসতে শুরু করে—‘মীমাংসা করে ফেলো, এত দূর যাও কেন?’’‍মানবাধিকারকর্মীদের উদ্বেগস্থানীয় মানবাধিকারকর্মীরা বলেছেন, এ ধরনের ঘটনায় প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ এবং পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করছে। তারা অবিলম্বে অভিযুক্তের গ্রেপ্তার ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগী পরিবার বলছে:“আমরা আতঙ্কে আছি। অভিযুক্ত ব্যক্তি এখনো এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, উল্টো আমাদেরকেই ভয় দেখাচ্ছে।”ভুক্তভোগী পরিবার উৎকণ্ঠা ও অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন। উনারা দেশবাসীর কাছে ন্যায়বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *