
Channel IR ডেস্ক রিপোর্ট
গাজার পথে ত্রাণ বন্ধ, ঘরে ঘরে ক্ষুধার্ত মৃত্যু—ইসরায়েলের অবরোধে ধ্বংসের মুখে ২৩ লাখ মানুষ।
সূত্র: রয়টার্স
ডেস্ক রিপোর্ট | Channel IR
মার্চের শুরু থেকে গাজায় ঢোকার সব চেকপয়েন্ট বন্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত এই উপত্যকায় একটিও ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে পারছে না। জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থাগুলো সতর্ক করছে—চেকপয়েন্টগুলো শীঘ্রই না খুললে, গাজার ২৩ লাখ মানুষের বড় অংশ অনাহারে মারা পড়বে।
যুদ্ধবিরতির সময় যে সামান্য খাবার মজুত করা হয়েছিল, সেটিও প্রায় শেষ। ছয় সপ্তাহ ধরে সব ধরনের খাদ্য, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ। জরুরি খাবার বিতরণ কার্যক্রম থেমে যাচ্ছে। গাজার প্রতিটি বেকারি বন্ধ হয়ে গেছে, বাজারগুলো খালি।
খান ইউনিসের এক শরণার্থী শিবিরে ৬৪ বছর বয়সী আখরাস বলেন, “আমরা যুদ্ধ টিকে গেছি, প্রতিদিন বোমা সহ্য করেছি। কিন্তু ক্ষুধা সহ্য করতে পারবো না। আমাদের ১৩ জনের পরিবার, এক ক্যান শিম দিয়ে কী হবে?”
উত্তরের নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে, শত শত মানুষ গরম ভাতের জন্য সারিবদ্ধ। ছোট ছোট শিশুদের হাতে বালতি—এক মুঠো খাবারের আশায় তারা ভিড় জমাচ্ছে। ত্রাণ সংস্থাগুলো জানায়, যদি ত্রাণ না ঢুকতে পারে, তাহলে তাদের কাছেও আর খাবার থাকবে না।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি আগে গাজার ২৫টি বেকারিতে রুটি সরবরাহ করতো। এখন সব বন্ধ। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থার জুলিয়েট তৌমা বলেন, “সব ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিস শেষ হয়ে যাচ্ছে। শিশুরা না খেয়ে ঘুমাচ্ছে, প্রতিদিন দুর্ভিক্ষ আরও কাছে আসছে।”
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, গাজা শাসনকারী হামাস ত্রাণ অপব্যবহার করছে। তাই তারা ত্রাণ বন্ধ রেখেছে। তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং অভিযোগ তুলেছে—ইসরায়েল খাদ্যকে যুদ্ধকৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে।
গাজার নাগরিক নাইমা ফারজাল্লা বলেন, “যদি আমরা বোমায় না মরি, তাহলে ক্ষুধায় মরবো।”
মানবাধিকার সংস্থাগুলো একে ‘মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ’ বলে আখ্যা দিচ্ছে। বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে, আর সময় যত যাচ্ছে, গাজার প্রতিটি ঘরে মৃত্যুর ছায়া আরও গাঢ় হচ্ছে।
Channel IR | প্রতিবেদক: আরিফুল ইসলাম
