
Channel IR ডেস্ক রিপোর্ট
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪০ ফিলিস্তিনি শহীদ, মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া বর্বর আগ্রাসনে শহীদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৩৯৯ জনে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একই সময়ে আরও ১৮৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন, যার ফলে আহতদের মোট সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৮৩-তে পৌঁছেছে। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক, ফলে শহীদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে রয়েছেন, যাদের উদ্ধারে মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। তবে ইসরায়েলি বাহিনী স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্ধার অভিযানে বাধা দিচ্ছে, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঈদের দিনেও বন্ধ হয়নি দখলদার বাহিনীর হামলা, বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড়
ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনেও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা থামেনি। ঈদের দ্বিতীয় দিন ব্যাপক হামলায় ৮০ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হন এবং অসংখ্য মানুষ আহত হন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও বহু মানুষ আটকে আছেন। এমন একটি দিনে, যখন মুসলিম বিশ্ব আনন্দে মেতে ওঠার কথা, তখন গাজায় কান্নার রোল পড়েছে। বিশ্বব্যাপী মুসলিম দেশগুলোসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
রেড ক্রিসেন্টের উদ্ধারকর্মীদের ওপরও হামলা, শাহাদাত বরণ করেছেন ১৫ জন
গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার রাফাহ থেকে ১৫টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই শহীদদের মধ্যে আটজন সংস্থাটির নিজস্ব কর্মী, ছয়জন বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য এবং একজন জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মী ছিলেন।
সংস্থাটি জানায়, তাদের উদ্ধারকর্মীরা আহতদের চিকিৎসা দিতে যাওয়ার সময় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার শিকার হন। ঘটনাটি রাফাহর হাশাশিন এলাকায় ঘটে, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী অবিরাম গোলাবর্ষণ করছিল। পিআরসিএস জানায়, এখনো এক উদ্ধারকর্মী নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাকে জীবিত বা শহীদ অবস্থায় খুঁজে বের করার জন্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
মানবিক সংকট চরম পর্যায়ে, অবিলম্বে সহায়তা প্রয়োজন
গাজায় অবরোধের কারণে খাদ্য, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই, ফলে আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে মানবিক সহায়তাও আটকে রেখেছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থাগুলো দ্রুত মানবিক সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানালেও ইসরায়েলি বাহিনী তা প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ করণীয়
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরায়েলের এই বর্বরোচিত হামলার নিন্দা জানিয়েছে। তুরস্ক, ইরান, কাতারসহ মুসলিম দেশগুলো ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি তুলেছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর চাপ প্রয়োগ না করে, তবে এই গণহত্যা চলতেই থাকবে। ফিলিস্তিনি জনগণ অবরোধ ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
Channel IR-এর পক্ষ থেকে গাজার জন্য দোয়া ও সংহতি
গাজার নিরীহ জনগণের ওপর চলমান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমরা তীব্র নিন্দা জানাই এবং শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। আহতদের দ্রুত সুস্থতা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।