আজ শুক্রবার ২৩শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেরানীগঞ্জে নারী শিক্ষিকাকে নেকাব পড়ে ক্লাস করতে হিন্দু অধ্যক্ষের বাঁধা

Channel IR বিশেষ প্রতিবেদন
তারিখ: ২২ মে ২০২৫ | স্থান: কেরানীগঞ্জ, ঢাকা

“কেরানীগঞ্জে” মুসলিম নারী শিক্ষিকাকে নেকাব পড়ে ক্লাস করতে হিন্দু অধ্যক্ষের বাঁধা!
স্থানীয়দের প্রশ্ন— এ কোন ধর্মনিরপেক্ষতা?**

কেরানীগঞ্জের কালিন্দী ইউনিয়নের অন্তর্গত ব্রাহ্মণকিত্তা এলাকার একটি সুপ্রতিষ্ঠিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সম্প্রতি ঘটে গেছে এক ঘটনাবহুল বিতর্ক, যা শুধুমাত্র একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নয়— প্রশ্নবিদ্ধ করেছে ধর্মীয় স্বাধীনতা, সহাবস্থান এবং নারীর অধিকারকেই।

১৭ বছরের অভিজ্ঞ শিক্ষিকার চোখে অশ্রু— ‘আজ আমাকে পর্দা নিয়ে অপমানিত হতে হলো!’

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা (রেবেকা সুলতানা), যিনি ১৭ বছর ধরে নিবেদিতপ্রাণভাবে শিক্ষকতা করে আসছেন,তিনি Channel IR এর কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি জনাব খালিদ আল হাসান কে জানান— “আমি সবসময় পর্দা মেনেই ক্লাস নিয়েছি। ছাত্রছাত্রীদের কখনো কোনো সমস্যা হয়নি। আজ হঠাৎ করেই বলা হলো, নেকাব পরে ক্লাস নেওয়া যাবে না। এটা আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস, ধর্মীয় অধিকার। তবু আমাকে বাধা দেওয়া হয়েছে।”

নিষেধাজ্ঞার কেন্দ্রবিন্দুতে ‘প্রধান শিক্ষক শোভন মিত্র’

ভুক্তভোগী মুসলিম শিক্ষিকা Channel IR কে আরও জানান সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া হিন্দু প্রধান শিক্ষক “শোভন মিত্র”- তাকে নেকাব খুলে ক্লাসে ঢুকতে এবং পাঠদান করতে বলেন, কিন্তু তার এই আদেশ সরাসরি মুসলিমদের ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত করেছে।

এই আচরণে ক্ষুব্ধ শিক্ষিকা বলেন, “একজন নারী হিসেবে, একজন মুসলমান হিসেবে— আমি আজ অপমানিত, অবমানিত।”

স্থানীয় জনতা ক্ষুব্ধ: ‘৯০% মুসলিমের দেশে এই বৈষম্য কেন?’

ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয় এলাকায়। স্থানীয় নাগরিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন—

“আমরা কখনো ভাবিনি, একজন নারী তার ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী পর্দা করতে চাইলেও বাধা পেতে হবে। তাহলে কী, এ দেশে এখন নেকাবও নিষিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে?”

“একজন হিন্দু প্রধান শিক্ষক কি এই দেশে একজন মুসলিম নারীর ওপর এমন চাপ প্রয়োগ করতে পারেন?”

“ধর্মীয় স্বাধীনতা, সংবিধানে স্বীকৃত অধিকার— সবই তবে কাগুজে কথা?”

মানবাধিকার কর্মীদের প্রতিক্রিয়া: ‘ধর্মীয় পোশাকের স্বাধীনতা সাংবিধানিক অধিকার’

মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক আন্দোলনের প্রতিনিধিরা বলছেন—

“কোনো কর্মক্ষেত্রে ধর্মীয় পোশাক পরিধানের অধিকার রুদ্ধ করা সাংবিধানিকভাবে গুরুতর লঙ্ঘন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তো আরও উদার ও সমতা-ভিত্তিক হওয়ার কথা!”

শেষ কথা নয়— এই ঘটনা কি ব্যতিক্রম, নাকি সূচনা একটি বৃহত্তর সংকটের?

কেরানীগঞ্জের এই ঘটনা হয়তো একটি বিচ্ছিন্ন উদাহরণ মনে হতে পারে। কিন্তু এটি কি আসলে গভীর কোনো সামাজিক সংকটের পূর্বাভাস? ধর্মীয় পোশাক, নারী স্বাধীনতা ও সহাবস্থান নিয়ে প্রশ্ন এখন ঘনীভূত হচ্ছে সমাজজুড়ে।

Channel IR এই ঘটনা নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা থাকবো মাঠে, আপনাদের কণ্ঠ তুলে ধরবো পর্দার আড়াল থেকে।

পরবর্তী প্রতিবেদন, অনুসন্ধান ও সাক্ষাৎকারের জন্য চোখ রাখুন Channel IR-এ।
কারণ, আমরা বলি অপ্রিয় সত্য— নিরপেক্ষভাবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *