
কওমী জননী উপাধি: এক কলঙ্কিত অধ্যায়
বাংলাদেশের কওমী অঙ্গনের ইতিহাসে এক বিতর্কিত ঘটনা ঘটে ২০১৮ সালে, যখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে “কওমী জননী” উপাধি দেওয়া হয়। এটি ছিল একটি বিশেষ শুকরানা মাহফিল, যেখানে কিছু ভন্ড আলেম রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই উপাধি দেন।
শুকরানা মাহফিলের পটভূমি
এই মাহফিলের মূল উদ্দেশ্য ছিল সরকার কর্তৃক কওমী সনদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। কিন্তু এর আড়ালে এক নতুন বিতর্কের জন্ম নেয়।
আনাস মাদানীর ভূমিকা
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হন আনাস মাদানী, যিনি ছিলেন শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী (রহ.)-এর পুত্র। অনেকে মনে করেন, তিনি রাজনৈতিক স্বার্থে বাবাকে ব্যবহার করে এই বিতর্কিত আয়োজনের অন্যতম নিয়ামক ছিলেন।
আল্লামা আহমদ শফী (রহ.)-এর কলঙ্কিত অধ্যায়
আল্লামা শফী (রহ.) ছিলেন দেশের কওমী মাদ্রাসাগুলোর শীর্ষ নেতা। কিন্তু এই ঘটনায় তার নামও বিতর্কিত হয়ে পড়ে, যদিও অনেকেই মনে করেন তিনি স্বেচ্ছায় এতে জড়াননি। বরং কিছু চাটুকার আলেম এবং তার পুত্রের কারণে তিনি এই কলঙ্কের অংশ হয়ে যান।
জনমতের প্রতিক্রিয়া
এই উপাধির বিরোধিতা করে দেশের বহু ওলামায়ে কেরাম, তালেবে ইলম এবং সাধারণ মুসলমানরা। তারা এটাকে কওমী অঙ্গনের এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে দেখেন এবং এর কঠোর প্রতিবাদ জানান।
ইতিহাসের শিক্ষা
এই ঘটনা আমাদের শিক্ষা দেয়, দ্বীনি অঙ্গনে রাজনীতি ঢুকে গেলে কীভাবে ইসলামের বড় ব্যক্তিত্বের নামও কলঙ্কিত হতে পারে। শায়খ আহমদ শফী (রহ.)-এর মতো নন্দিত ব্যক্তিত্বের নাম এক ষড়যন্ত্রের বলি হয়।
এটি ছিল কওমী ইতিহাসের একটি “নিন্দিত অধ্যায়”, যা ভবিষ্যতে ওলামায়ে কেরাম ও মুসলিম উম্মাহকে সচেতন হওয়ার জন্য একটি শিক্ষার উৎস হয়ে থাকবে।