
Channel IR ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২৫
অভ্যুত্থানের দিন ৫ ঘণ্টা স্ত্রীসহ বাথরুমে লুকিয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের — স্বীকারোক্তি ভারতীয় মিডিয়ায়
ঢাকা, ২৬ মে:
৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান, আর আওয়ামী লীগ নেতারা ছড়িয়ে পড়েন আত্মগোপনে—এমন চিত্রের মধ্যেই প্রথমবারের মতো ভারতীয় গণমাধ্যমে মুখ খুললেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ভারতীয় দৈনিক ‘দ্য ওয়াল’-এর এক্সিকিউটিভ এডিটর অমল সরকারকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কাদের জানান, সেই দিন তিনি তার সংসদ এলাকার পাশের একটি বাসায় স্ত্রীসহ আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং সেখানে প্রায় ৫ ঘণ্টা বাথরুমে লুকিয়ে ছিলেন।
কাদের বলেন, “আমি যে বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলাম, সেটাতেও হামলা হয়। আমি আর আমার স্ত্রী বাথরুমে ঢুকে দরজা আটকে রাখি। তারা জানতো না আমি ওই বাসায় আছি। পরে তারা বাথরুমের ভেতরেও ঢুকে পড়ে, এমনকি কমোড-বেসিনও লুট করে।”
তিনি আরও জানান, “আমার স্ত্রী বারবার বলছিলেন আমি অসুস্থ। একসময় তারা জোর করে ঢোকার হুমকি দিলে আমি বলি দরজা খুলে দাও। এরপর ৭-৮ জন ছেলে ঢুকে পড়ে। প্রথমে তাদের মনোভাব ছিল খুবই আক্রমণাত্মক। হঠাৎ একজন বলে, ‘নেত্রী চলে গেলেন, আপনি যাননি কেন?’ এরপর তারা ছবি তুলতে শুরু করে, সেলফি নেয়। তখন পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়ে যায়।”
সাক্ষাৎকারে কাদের জানান, তারা তাকে একটি ইজিবাইকে করে নিরাপদ দূরত্বে পৌঁছে দেয়। কেউ বলে, “চাচা-চাচি অসুস্থ, হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি”—এই কৌশলেই চেকপোস্ট পার হন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “সেদিন যদি ছেলেগুলোর মনোভাব না বদলাত, তারা চাইলেই আমাকে আর্মি বা জনতার হাতে তুলে দিতে পারতো। আমি হয়তো আজ বেঁচে থাকতাম না।”
প্রায় তিন মাস বাংলাদেশেই আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানান কাদের। তিনি বলেন, “আমি চেষ্টা করেছি শ্রমিক অসন্তোষ, কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখে কিছু সংগঠিত করা যায় কিনা। এরপর যখন দেখলাম অ্যারেস্ট শুরু হয়েছে, তখন সিদ্ধান্ত নিই দেশ ছাড়ার।”
কাদের স্মরণ করেন, “১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যার পরও আমি কলকাতায় এসেছিলাম, তখন ৯ মাস ছিলাম। পরে জগন্নাথ হলে বৈঠক চলাকালীন আমাকে অ্যারেস্ট করা হয়। ওয়ান ইলেভেনের পরও জেলে গেছি।”
সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে প্রশ্ন করা হয়, ছেলেগুলো কি আওয়ামী লীগের কর্মী ছিল? জবাবে কাদের বলেন, “আওয়ামী লীগের হলে চিনতাম, ওরা ছিল না।”
এই বক্তব্যে স্পষ্ট, সরকারের পতনের দিনে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে এবং আত্মগোপনের পথেই বাঁচার চেষ্টা করেছে।
Channel IR রিপোর্ট, ঢাকা।
সংগ্রহ: আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সম্পাদনা: নিউজরুম, Channel IR